ক্রাইম রিপোর্ট

৫ আগস্টের পরে হচ্ছে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা, চলছে দেদার অর্থ উপার্জন, মামলার বাদীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে!

  বার্তা বিভাগ ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:১৫ অপরাহ্ণ ই-পিন্ট / ইপেপার

ডেস্ক নিউজঃ হত্যা মামলা যার-তার নামে৷ অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত বাদীও জানেন না, কোথায় কে তাঁর আপনজন হত্যার বিচার চেয়ে মামলা ঠুকেছে৷ জীবিত ব্যক্তি হঠাৎ জানতে পারেন তাকে মৃত দেখিয়ে হয়ে গেছে মামলা, চলছে দেদার অর্থ উপার্জন!

স্বামীকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এক নারী৷ মামলা দায়েরের তিন মাস পর ওই নারীর স্বামী থানায় হাজির হয়ে জানান তিনি জীবিত৷

ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার আশুলিয়ায়৷
এমন অনেক মামলার খবরও জানা যাচ্ছে, যেখানে একটি হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে৷ অনেক জায়গায় মামলা নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগও উঠেছে৷

টাকা নিয়ে জেলে ঢুকায়, বের করে!
গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গুলিবিদ্ধ হন মো. জহুর আলী৷ ঘটনার এক মাস পর তার বড় ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন৷ সেই মামলায় আসামি ধরা ও ছাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন গুলিবিদ্ধ জহুর আলী৷ নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ আমারে গুলি করছে৷ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবো৷ কিন্তু পরে দেখি মাসুম হেলাল সবাইরে মামলায় ঢুকাইয়া দিছে৷ এই মামলা নিয়া এখন ব্যবসা শুরু হইছে৷ সে (মাসুম হেলাল) কোটি টাকা নিছে৷ শুনছি সে এখন ক্যানাডা চইলা যাইবো৷ টাকা নিয়ে জেলে ঢুকায়, বের করে৷ মামলায় যারার নাম নাই তারারে পুলিশ ধরে বেশি৷ লোকজন বলে, আমরা টাকা নিচ্ছি৷ এটা মিথ্যা৷ আমরা কোনো টাকা পাই নাই৷ আমরা গরিব মানুষ৷ এখন আমরা পড়ছি মহাবিপদে৷” গুলিতে আহত মো. জহুর আলী এখন ঢাকা পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) আছেন৷

সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘মামলা হলেই সেখানে বাণিজ্য থাকবে৷ আমাদের কাছেও এমন বহু অভিযোগ আসছে৷ এখন সমস্যা হচ্ছে, কোর্ট চত্ত্বর থেকে আইনজীবীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ আসলে এই সরকার সংস্কারের নামে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে৷ এই সরকারের উচিত হবে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা৷ তাছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ আমি দেখি না৷”

বাবার আগে অচেনা লোকের মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ অক্টোবর রাজধানীর ঝিগাতলা মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মোবাশ্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল মোতালিব (১৪)৷ সেই ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মোতালিবের বাবা আব্দুল মতিন৷ এই ঘটনায় ৩০ অক্টোবর আদালতে একটি মামলার অভিযোগ দেন শেখ মুহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ নামের এক ব্যক্তি৷ মামলাটি হাজারীবাগ থানায় হত্যা মামলা হিসেবে দায়ের করার নির্দেশ দেন আদালত৷ মাছুম বিল্লাহ ভিক্টিমের নাম উল্লেখ করেন আব্দুল মোতালেব মুন্না৷ তার বয়স উল্লেখ করেন ১২ বছর৷ বাদীর সঙ্গে ভিক্টিমের কোনো সম্পর্ক নেই৷ শিক্ষার্থী মোতালিবের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায়৷ মাছুম বিল্লাহর বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুরে৷

আব্দুল মতিন এজাহারে ১৭৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করেছেন৷ এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ অন্যদিকে মাছুম বিল্লাহ যে অভিযোগ দিয়েছেন, সেখানে আসামি করেছেন ২০ জনকে৷ তাদের কারো বাসা ওই এলাকায় নয়, অধিকাংশ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তও নয়৷ আসামিদের মধ্যে পুলিশ ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডেও নিয়েছে৷ একটি প্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার জন্য এই মামলা বলে আসামিদের অভিযোগ৷

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এম এ রাজ্জাক গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিষ্ঠানটি দখলে নেওয়ার জন্য মাছুম বিল্লাহ এই মামলা করেছেন৷ ওই মামলার পর ডিবির একজন এসআই এসে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজনকে ধরে নিয়ে গেছে৷ প্রতিষ্ঠানটি মাছুম বিল্লার হাতে তুলে দিয়েছে৷ এখন এদের অন্য মামলায়ও ফাঁসানো হবে বলে টাকা চাচ্ছে৷ বিষয়টি জানিয়ে আমি পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছি৷’’

নিহত শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুল মতিন গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘ছেলে হত্যার ঘটনায় আমি নিজে মামলা করেছি৷ অন্য কেউ কেন মামলা করবে? আমি ওই ব্যক্তিকে চিনি না৷ তিনি নিশ্চয় ভালো উদ্দেশ্যে এই মামলা করেননি৷ হাজারীবাগ থানার ওসি ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন মামলার কথা৷ আমি নিজেও যে মামলাটি করেছি, সেখানে ছাত্ররাই আসামিদের নাম উল্লেখ করেছে৷ আমি এদের কাউকে চিনি না৷ তারপরও এই মামলা বাদি আমি৷’’

আসামি আসলে ৪, নাকি ২০৮৭ জন?
যাত্রাবাড়ি থানার সামনে গত ৫ আগস্ট নিহত হন পিকআপ চালক মো. শাহীন৷ ওই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম৷ মামলায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে৷ অথচ স্বপ্না বেগম বলেন, ‘‘আমি মামলায় মাত্র ৪ জনকে আসামি করেছিলাম৷ কিন্তু এত মানুষের নাম কিভাবে মামলায় যুক্ত হলো সেটা আমি জানি না৷ পুলিশ আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেনি৷”

ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘এসব মামলায় কাউকে হয়রানির সুযোগ নেই৷ তদন্ত না করে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না৷ এমনকি কেউ যদি ভুয়া বা হয়রানি করতে মামলা করেন, তাহলে বাদীর বিরুদ্ধেও আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে৷ আর কেউ যদি অনৈতিক সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে, অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো৷’’

‘মৃত’ ব্যক্তির প্রতিবাদ
আশুলিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম (২১) নামের এক নারী তার স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন৷ এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়৷ ৮ নভেম্বর মামলাটি ঢাকার আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়৷ মামলার বাদী কুলসুম বেগম এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট সকালে তার স্বামী মো. আল আমিন মিয়া (৩৪) মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন৷ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিকেল ৪টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বিজয়মিছিলে তিনিও ছিলেন৷ তবে পরাজয় মেনে না নিতে পেরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়৷ এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার স্বামী নিহত হন৷

তিন মাস পরে থানায় হাজির হন আল আমিন৷ সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘৫ আগস্ট সে (স্ত্রী) আমার সঙ্গে সিলেটেই ছিল৷ এর তিন-চার দিন পর ঝগড়া করে মানিকগঞ্জে বাবার বাড়ি চলে যায়৷ এরপর আর তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি৷ তিন-চার দিন আগে একজনের কাছ থেকে জানতে পারি, আমি ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) আন্দোলনে মারা গেছি উল্লেখ করে সে একটা মামলা করেছে৷ ওই মামলার একজন আসামি আমাকে ফোন দিয়া ঘটনাটি বলছে৷ এরপরই আমি পুলিশের কাছে যাই৷ আমি জীবিত আছি৷ আমার স্ত্রী মিথ্যা মামলা করেছে৷ আমি এখনো মারা যাইনি৷ আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি৷’’

জীবিত কিশোরকে মৃত দেখিয়ে মামলা, পরিবার আত্মগোপনে
সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘শত শত মিথ্যা মামলায় তো আদালত শুনানিই করছে না৷ হাইকোর্টে একটা বেঞ্চ করেছে, সেখানে একদিন ৯ হাজার আবেদন নিল৷ পরে একদিন দেড় হাজার আবেদন নিয়েছে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩০০ আবেদনেরও শুনানি হয়নি৷ আদালত বলছে, আরেকটু অপেক্ষা করতে৷ এদিকে আজকেই আমি একটা ঘটনা জানলাম৷ কেরানীগঞ্জে ১২ বছরের এক কিশোর মারা গেছে বলে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে একটা মামলা হয়েছে৷ আসলে ওই কিশোর মারা যায়নি৷ তার পরিবারকে পালিয়ে থাকতে বলেছে৷ ছেলেকে নিয়ে তার বাবা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন৷ বনশ্রীতে ৬২ জন সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে৷ ওই মামলায় বনশ্রী ও আফতাবনগর সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও আসামি করা হয়েছে৷ ওই মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য ৫-১০ লাখ টাকা করে চাচ্ছে৷ ফলে মানুষ এখন কোথায় ন্যায় বিচার পাবে?’’

কার মামলা কে করে, কতবার করে!
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ আগস্ট ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় কিশোর মাহমুদুল হাসান৷ মাসখানেক পর ১২ সেপ্টেম্বর তার বাবা রিকশাচালক মিজানুর রহমান ঢাকার আদালতে যান ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করতে৷ আদালত তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন৷ পরে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ আদালতকে জানায়, ওই ঘটনায় আগেই একজন মামলা করেছেন৷ ফলে বাবার আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ এরপর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মাহমুদুল (১৫) হত্যায় একটি নয়, দুটি মামলা হয়েছে৷ এর একটি ডেমরা থানায়, তাতে আসামি করা হয় ৯৩ জনকে৷ এতে বলা হয়, মাহমুদুলকে ডেমরা এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়৷ অপর মামলাটি যাত্রাবাড়ী থানায়, তাতে আসামি করা হয় ৩৭ জনকে৷ এই মামলায় বলা হয়, মাহমুদুলকে হত্যা করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী৷ দুই মামলায় দুই থানার পুলিশ ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে৷

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘অনেকগুলো ঘটনায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে৷ কারণ, ৫ আগস্টের আগের প্রত্যেকটি ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটা মামলা করেছে৷ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরিবার মামলা করতে গিয়ে দেখে পুলিশ মামলা করেছে৷ সেখানে আসামি করা হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের৷ ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে৷ সরকার ট্রাইব্যুনাল করেছে৷ সেখানেই এই মামলাগুলো একত্রিত করে তদন্ত করা হবে, যাতে সঠিক বিচার হয়৷”

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক বিভিন্ন মামলায় ঢালাওভাবে আসামি করার অভিযোগ সামনে আসছে৷ এ নিয়ে বিভিন্ন সময় অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা কথা বলেছেন৷ আইনজ্ঞরা বলছেন, যার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ আনা হচ্ছে, রায়ে তাকে নির্দোষ ঘোষণা করা হলে মামলাকারীর সমান শাস্তি হতে পারে৷ অর্থাৎ দোষী প্রমাণ হলে আসামির যে শাস্তি হতো, নির্দোষ প্রমাণ হলে মামলাকারীকে একই শাস্তি দেওয়া হতে পারে৷

সিনিয়র আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগকারী কিংবা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২১১ ধারা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়৷ তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো, ওই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে হবে৷ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের যদি মনে হয়, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, ভিত্তিহীন, তুচ্ছ, বিরক্তিকর বা হয়রানিমূলক এবং আসামির প্রতি চাপ সৃষ্টি করতে মামলাটি করা হয়েছে, তাহলে এ ধরনের মামলা মিথ্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে৷ মামলা মিথ্যা বা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হলে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগকারী বা মামলা দায়েরকারীকে দন্ড দিতে পারেন৷ এ ছাড়া সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বাদী হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করতে পারেন৷”

মামলা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হলে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দিতে পারেন৷ এমনকি আদালত মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে দন্ডমূলক ব্যবস্থাও নিতে পারেন৷ আমলযোগ্য নয়- এ রকম কোনো মামলায় কোনো পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা প্রতিবেদন দিলে তার বিরুদ্ধেও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারেন৷

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মামলা করে যাতে কাউকে হয়রানি করা না যায়, সেজন্য ডিসি, এসপি, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলা পর্যায়ে কমিটি করার কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল৷ তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় মামলা করে যাতে কেউ সুযোগ নিতে না পারে, সেজন্য এই কমিটি মামলার এজাহার বা এফআইআর করার আগে যাচাই করে দেখবে৷ কারণ, হয়রানিমূলক মামলা নিয়ে তারাও বিব্রত৷ এ নিয়ে কী করা যায় সেটা নিয়ে তারা ভাবছেন৷ গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন৷

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আজ যারা হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলা করছেন, কাউকে কাউকে নাকি হুমকিও দেওয়া হচ্ছে যে টাকা না দিলে মামলা করা হবে৷” হয়রানিমূলক মামলাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা মনে রাখেন, আমি যদি এই মন্ত্রণালয়ে থাকি, আপনাদের কীভাবে শাস্তির আওতায় আনা যায়, সেই আইন খুঁজে বের করবো৷’’

আরও খবর:

Sponsered content